একটি সংঘবদ্ধ প্রশ্নপত্র জালিয়াত চক্র দীর্ঘদিন টাকার বিনিময়ে
প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ভর্তি বা নিয়োগ শতভাগ নিশ্চিত করত।১৫ লাখ টাকার
বিনিময়ে মেডিকেল কলেজে , কৃষি ব্যাংকে অফিসার পদে নিয়োগের জন্য ৬ লাখ আর
জুডিসিয়ার সার্ভিস কমিশনের সহকারী জজ পদের জন্য লাগবে ১০ লাখ টাকা!
শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ভবনের
দ্বিতীয় তলা থেকে এই চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪ এর একটি
দল। গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের সহকারী পরিচালক
(বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ) মো. ওমর সিরাজ (৩২), বাংলাদেশ জুডিসিয়াল
সার্ভিস কশিনের স্টোর কিপার রেজাউল করিম (৩২) ও ঈশান ইমতিয়াজ হৃদয় (২২)। এ
সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন-২০১৪ এর সহকারী জজ নিয়োগ
পরীক্ষার ২৩টি উত্তরপত্র, একই পরীক্ষার দুটি প্রশ্নপত্র, নগদ দুই লাখ
টাকা, এক্সিম ব্যাংকের ৪ লাখ টাকার একটি চেক, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের
সিল, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, তিনটি মোবাইল ফোন এবং একটি আইপ্যাডও উদ্ধার
করা হয়েছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক মুফতি মাহমুদ জানান,
‘চক্রের মূলহোতা ওমর সিরাজ দীর্ঘদিন যাবৎ চক্রের বাকী সদস্যদের সাথে নিয়ে
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা, কৃষি ব্যাংকের অফিসার নিয়োগ, জুডিশিয়াল সার্ভিস
কমিশনের সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র সরবরাহ করে জালিয়াতি করে
আসছিল। ওমর সিরাজ মূলত তিন ধাপে জালিয়াতি করে থাকেন। প্রথম ধাপে বিভিন্ন
ভর্তি পরীক্ষায় তার বাছাইকৃত একটি গ্রুপকে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থী হিসেবে
পাঠান। এই গ্রুপের কাজ হল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কৌশলে হল থেকে বের করে
অপেক্ষমান আরেকটি গ্রুপের কাছে তা হস্তান্তর করা।
প্রশ্নপত্র সংগ্রহকারী গ্রুপটি প্রশ্নপত্র দ্রুত সমাধান করে ওমর সিরাজের
কাছে সরবরাহ করার পর ওমর সিরাজ কিছু ব্যক্তির সাহায্যে চুক্তিবদ্ধ
পরীক্ষার্থীদের সুকৌশলে উন্নত প্রযুক্তির ডিভাইসের (চীন থেকে আমদানি করা
মাস্টারকার্ড ও ব্লুটুথ; যা অতিক্ষুদ্র এবং কানের মধ্যে লুকানো থাকে)
মাধ্যমে উত্তরপত্র বাইরে থেকে সরবরাহ করতেন।
আটক হওয়া অন্য দুই সদস্যের মধ্যে ঈশান ইমতিয়াজ ২০১০ সাল থেকে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত।
জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা ওমর সিরাজ জানান, এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়
জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষার জমাকৃত উত্তরপত্র
রেজাউল করিম এবং কন্ট্রোলার পার্সোনাল অফিসার নাজিমের সহায়তায় বের করে
চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের দিয়ে পুনরায় উত্তরপত্র তৈরি করে জমা করে
দিয়েছেন।