একাই একশ নাসির
ভারত ‘এ’ দলের সামনে চ্যালেঞ্জিং স্কোরই ছুড়ে দিয়েছিল মুমিনুল হকের দল। ২৫৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩১ রানে ফিরলেন স্বাগতিকদের ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল। এরপর বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে খানিকক্ষণ ভোগাল উন্মুক্ত চাঁদ-মনীশ পান্ডের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। এ জুটিতে আসে ৮৮ রান। মিরপুরে গত জুনে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের সেই দৃশ্যটা মনে আছে? সেদিন বাংলাদেশ দলকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন নাসিরই। আজও দলকে এনে দিলেন প্রয়োজনীয় ব্রেক থ্রু। উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ভারত ‘এ’ দলের অধিনায়ক উন্মুক্তকে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান নাসির। ফেরার আগে উন্মুক্ত করেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রান। এরপর সময় যত গড়িয়েছে ততই পরাজয় ত্বরান্বিত হয়েছে ভারত ‘এ’ দলের। স্বাগতিকদের শেষ ৯ উইকেট পড়েছে ৬৮ রানে।
ক্রমেই দলের অপরিহার্য বোলার হয়ে ওঠা নাসিরের ভেলকি চলেছে ম্যাচজুড়ে। ভারত ‘এ’ দলের কোমর ভাঙার মূল কাজটাই করেছেন তিনি। ১০ ওভারে ৩৬ রানে পেয়েছেন ৫ উইকেট। লিস্ট ‘এ’-তে এই প্রথম ৫ উইকেট পেলেন। নাসির যদি নায়ক হন, রুবেল তবে প্বার্শনায়ক। সহ-অধিনায়কের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ধসিয়ে দিয়েছেন ভারত ‘এ’ দলের ব্যাটিং লাইনআপ। ৯ ওভারে ৩৩ রানে ৪ উইকেট ডানহাতি পেসারের। বাকি উইকেটটি আল আমিন হোসেনের। আরও একজনের নাম না বললেই নয়—লিটন। পাঁচটি ডিসমিসাল এ উইকেটরক্ষকের হাতে। ‘অলস’ সময়ই কেটেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ফিল্ডারদের! লিটনের পাঁচটি ডিসমিসাল বাদে ভারত ‘এ’ দলের বাকি পাঁচ উইকেট পড়েছে পরিষ্কার বোল্ড হয়ে। বোঝাই যাচ্ছে, নাসির-রুবেলের বল কতটা দুর্বোধ্য হয়ে উঠেছিল ভারত ‘এ’ দলের কাছে।
বোলিং জাদুর আগে ব্যাট হাতেও ঝলক দেখিয়েছেন নাসির। এমনিতে সাত-অাটে নেমে বড় স্কোর গড়া সম্ভব হয় না। বল ও সময় কোনোটাই পর্যাপ্ত থাকে না হাতে। কিন্তু ‘এ’ দলের ভারত সফরে ব্যাটিংয়ের ভালো সুযোগই পাচ্ছেন। প্রথম ম্যাচে উইকেটে এসেছিলেন ১৭তম ওভারে। করেছিলেন দলের মান বাঁচানো ৫২। আজও টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৯তম ওভারে আসেন উইকেটে। দল তখন বিপর্যয়ে, ৫ উইকেটে ৮২। ষষ্ঠ উইকেটে লিটনকে সঙ্গী করে শুরু করেন ইনিংস মেরামত। ১৫২ রানের মাথায় ফিরে যান ৪৫ রান করা লিটন। ৭০ রানের জুটি ভেঙে গেলে আবারও বিপদে বাংলাদেশ। হাল ছাড়েননি নাসির। আরাফাত সানিকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ৫০ রানের আরেকটি কার্যকরী জুটি। তবে মাত্র ১০ রানের দুই উইকেট পড়লে অলআউটের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। এ দফা আবারও কান্ডারি নাসির। শেষ পাঁচ ওভারে ৪০ রান তুলে নিয়ে পার করেন আড়াই শ। এরই মাঝে তুলে নেন নিজের সেঞ্চুরিও। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে এটি তৃতীয় সেঞ্চুরি নাসিরের। ৯৬ বলে অপরাজিত ১০২ রানের দারুণ ইনিংসে চারের মার ছিল ১২টি আর একটি ছয়।
ব্যাট হাতে ‘ফিনিশার’, বল হাতেও ‘ফিনিশ’ করে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষকে! ক্রমেই যেন দুর্দান্ত অলরাউন্ডার হয়ে উঠছেন নাসির।